নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আত্হারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বইছে। আগামী ১৭ ও১৮ জানুয়ারি (শুক্র ও শনিবার) প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়েছে।
পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য ৬০০ প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাম নিবন্ধন করেছেন। উৎসবকে রঙিন ও সফল করতে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন আহমদ। ২ দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে থাকবে ১৭ জানুয়ারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মাঝে উদযাপন লোগো সম্বলিত উপহার সামগ্রী বিতরণ, র্যালি, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারন এবং ১৮ জানুয়ারী স্থানীয় ড্রীমলেন্ড পার্কে আলোচনা সভা, অতিথি শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সরেজমিন স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, পুনর্মিলনীকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসকে রাঙ্গানো হচ্ছে নতুন রঙ্গে। যার কারনে প্রতিষ্ঠানে বইছে সাজ সাজ রব। দেখা গেছে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি দেখতে এবং সহযোগিতা করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসে এসে সময় কাটাচ্ছেন। রবিবার (১২ জানুয়ারী) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সময় দিতে দেখা গেছে এই স্কুলের কয়েকটি ব্যাচের প্রাক্তন কয়েকজন শিক্ষার্থীদের। যাদের মধ্যে ছিলেন,পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব,বিদ্যুৎ জ্যোতি পুরকায়স্থ,অর্থসচিব বেলাল আহমদ সেলিম, যুগ্ম আহবায়ক সেলিম আহমদ, সুজন খান,মাছুম আহমদ,রেদোয়ান আহমদ,জাহাঙ্গীর আলম,নুরুজ্জামান চৌধুরী শিপন,হাবিবুর রহমান মিল্লুস এবং মলয় দত্ত মিঠু।
এসময় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ উপস্থিত পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে পুনর্মিলনীর প্রস্তুতি নিয়ে মত বিনিময় করেন।
প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ১৯৪৩ সালে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের হেতিমগঞ্জ এলাকায় আত্হারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠা। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও তৎকালীন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ২০১৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানে মাত্র ৬৫ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কলেজ শাখার যাত্রা শুরু।বর্তমানে কলেজ শাখায় মানবিক ও বানিজ্য বিভাগ মিলিয়ে ২০০ জন শিক্ষার্থীসহ এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৬৩৪ জন।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত আছেন শিক্ষক ২৬জন। কর্মচারী ৪জন।প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিকতাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রথম বারের মত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ১৯৯২ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মলয় দত্ত মিঠু বলেন, আজ বিদ্যালয়ে এসে উৎসব উৎসব ভাব দেখে আমার মনে উৎসবের রং লেগেছে। এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আমাদের সবার ভাত্ৃত্বের বন্ধনকে আরো অটুট করবে।
অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক মো. আকমান আলী জানান- যদিও আমি স্কুল থেকে অবসর নিয়েছি তবুও বলবো পুনর্মিলনীটা অনেক আনন্দের। আমি অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করি।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনসুর আহমদ চৌধুরী বলেন- যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানে প্রথমবারের মত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের অনেক ভুলক্রটি থাকতে পারে। সকল ভুলক্রটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে অনুষ্ঠানটি সফল ও স্বার্থক করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
১৭ জানুয়ারী প্রথম দিনের অনুষ্ঠানটি এবং ১৮ জানুয়ারী ২য় দিনের অনুষ্ঠানটিতে নিবন্ধিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার পরিজনসহ প্রায় ১ হাজার মানুষের উপস্থিতি হবে বলে জানিয়েছেন পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদ।